পীরগঞ্জে ভুট্টা নিয়ে চরম দুর্ভোগে কৃষক -ন্যায্য দাম নিয়েও হতাশা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) স্টাফ রিপোর্টার।ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় চলছে ভুট্টা মাড়াইয়ের মৌসুম। তবে বৈরী আবহাওয়ায় ভুট্টা তুলতে ও শুকাতে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। আবার এ অবস্থায় বাজারে চাহিদা ও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় বেড়েছে কৃষকের হতাশা। হাটপাড়া ফাজিল মাদ্রাসার মাঠজুড়ে দেখা যায় অর্ধশতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুরা ভুট্টা শুকানোর কাজে ব্যস্ত। কেউ নেট বিছাচ্ছে, কেউ ভুট্টা উল্টে দিচ্ছে, কেউ বা হঠাৎ বৃষ্টির আশঙ্কায় দ্রুত ঢেকে রাখছে। আকাশে মেঘ, মাঝে মাঝে বৃষ্টি, আবার হালকা রোদ। এই অস্থির আবহাওয়ায় ভুট্টা ভালোভাবে শুকানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কৃষক নুরুজ্জামান বলেন, রোদ না থাকায় ভুট্টা শুকাতে অনেক সময় লাগছে। বৃষ্টি এলেই আবার ঢেকে রাখতে হয়। এতে বাড়তি শ্রম ও খরচ দুটিই বাড়ছে। শ্রমিক মর্জিনা খাতুন বলেন, সকালে রোদ, দুপুরে বৃষ্টি এমন হলে কষ্টই শুধু বাড়ে। আবার না শুকালে ভুট্টা নষ্ট হয়ে যাবে।শুধু আবহাওয়া নয়, বাজারে ন্যায্য দাম না পাওয়াও কৃষকদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। বর্তমানে প্রতি মন ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৭৫০–৮০০ টাকায়, যা উৎপাদন খরচের তুলনায় অনেক কম। ছোট বেগুনবাড়ি গ্রামের কৃষক শাহাজাহান আলী জানান, এই দাম দিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না। সরকার যদি ক্রয় কার্যক্রম চালু করতো, তাহলে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতো। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভুট্টা এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। তবে আবহাওয়ার কারণে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে খোলা জায়গায় শুকানোর জন্য কোনো সরকারি সহায়তা না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বৈরী আবহাওয়া ও বাজারে মূল্যহীনতা এই দুই সংকটে পড়ে পীরগঞ্জের ভুট্টা চাষিরা দিশেহারা। সময়মতো সরকারি সহায়তা ও ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে আগামীতে কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।