পীরগঞ্জে ঐতিহাসিক কুরআন দিবস উদযাপন
মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্বের আলো টিভি স্টাফ রিপোর্টার পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও)। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ১১ মে ঐতিহাসিক ‘কুরআন দিবস’ উদযাপনে আলোচনা সভা ও সাধারণ ছাত্রদের মাঝে কোরআান বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকাল ১০ টায় উপজেলা ইসলামি ছাত্রশিবিরের আয়োজনে পীরগঞ্জ মডেল মসজিদ হলরুমে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাব্বির রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামী মনোনীত ঠাকুরগাঁও-৩ এর সংসদ সদস্যপ্রার্থী ও রানীশংকৈল উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর দুইবারের সফল সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মাস্টার, উপজেলা জামায়াতের আমীর বাবলুর রশিদ, ইসলামি ছাত্রশিবির ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সেক্রেটারি আনিস আহাম্মেদ, ৭নং হাজিপুর ইউনিয়ন আমীর মাহবুব আলম, তরবিয়ত সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন, পীরগঞ্জ দক্ষিণ থানা সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম মিঠুন, পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি আশিকুর জামান প্রমূখ। এ সময় জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাধারণ ছাত্রসহ গণমাধ্যম কর্মীগন উপস্থিত ছিলেন। মূলত এই দিবসটি বাংলাদেশের ইসলামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, যা প্রতিবছর স্মরণ করা হয় কুরআনের মর্যাদা রক্ষায় আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে। ১৯৮৫ সালের ১২ এপ্রিল ভারতের কলকাতা হাইকোর্টে দুই ব্যক্তি-পদ্মপল চোপরা ও শীতল সিং একটি রিট আবেদন দায়ের করেন, যাতে কুরআনের কিছু আয়াতকে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক দাবি করে কুরআনের সব কপি বাজেয়াপ্ত করার অনুরোধ জানানো হয়। বিচারক মিসেস পদ্মা খাস্তগীর এই মামলা গ্রহণ করে রাজ্য সরকারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট প্রদানের নির্দেশ দেন।এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সারা বিশ্বে মুসলমানদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশেও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ মে ১৯৮৫ সালের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। তৎকালীন প্রশাসন সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি করে এবং উপস্থিত জনতাকে স্থান ত্যাগের নির্দেশ দেয়। জনতা শুধুমাত্র দোয়া করার অনুমতি চাইলে, ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা তা প্রত্যাখ্যান করে পুলিশকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। এই গুলিবর্ষণে শাহাদাত বরণ করেন, আব্দুল মতিন (১০ম শ্রেণির ছাত্র), শীষ মোহাম্মদ, সেলিম উদ্দিন (৮ম শ্রেণির ছাত্র) শাহাবুদ্দিন, রশিদুল হক, আলতাফুর রহমান সবুর (কৃষক), নজরুল ইসলাম (রেল শ্রমিক), মোক্তার হোসেন (রিকশাচালক) সহ ৮ জন। সভায় বক্তারা বলেন, এই ঐতিহাসিক দিনটি স্মরণে রেখে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিবছর ১১ মে ‘কুরআন দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো কুরআনের মর্যাদা রক্ষা, শহীদদের স্মরণ, এবং ইসলামী মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসার করা। তারা আরোও বলেন, এই ঘটনাটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, কুরআনের মর্যাদা রক্ষায় মুসলমানরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। এই দিবসটি কুরআনের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার একটি সুযোগ।