ঠিকাদারের খামখেয়ালিতে জন দুর্ভোগের শিকার ছয় গ্রামের মানুষের
কুমিল্লা প্রতিনিধি
বৃষ্টিতে খোড়াখুড়ি করে রাখা সড়কে চলাচল বন্ধ হয়েছে ৬ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। এক ফিট কাঁদামাটিতে অসম্ভব অসুস্থ রোগী সহ জরুরী যানবাহন চলাচল। বাবুর্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাবুর্চি দাখিল মাদ্রাসা সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীদের চলাচলের একমাত্র পথও এটি। কিন্তু ঠিকাদারের দেখা নেই গত ৭ মাস।
প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের বাবুর্চি বাজার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। ৭৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৬৯ টাকা ব্যায়ে ৮.১১ মিটার সড়কের কাজটি শেষ করতে বাড়ানো হয়েছে সময়।জানা যায়, ৮.১১ মিটার বাবুর্চি বাজার সড়কটি ৭৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৬৯ টাকায় কাজ চুক্তিটি পায় মুন্সিরহাট বাজারস্থ ফাতেমা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী অলি আহমেদ মজুমদারের ছেলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাজিয়া ট্রেডার্স।
২০২৪ জুন এর ৪ তারিখে শুরু করে একই বছরের অক্টোবরের ৩ তারিখে কাজ শেষ না করায় নভেম্বরের ৭ তারিখ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে পূর্ব দিকে বাবুর্চি বাজারের মধ্যখান দিয়ে যাওয়া সড়কটি যেন প্রস্তুত করা হয়েছে ধানের চারা রোপনের জন্য। ভুলক্রমে একটি সিএনজি ঢুকে পড়ার পর চার জনে ধাক্কা দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। আধা ঘন্টার চেষ্টায় সফল হয়েছেন ফিরে যেতে। বাজার ব্যবসায়িরা মাথায় করে দোকানে নিচ্ছেন মালামাল। শিক্ষার্ত্থী ও সাধারণ পথচারীরা হাঁটছেন সড়কের দুই পাশের ব্রিক ওয়ালের উপর দিয়ে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা স্থানীয় জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘দ্রুত কাজটি করার জন্য ঠিকাদারকে বারবার বলেছি। এবং আপনাকে যদি কেউ(চাঁদাবাজ) ডিস্টার্ব করে তাও জানান; না হয় কেন রাস্তার কাজটি শুরু করে ফেলে রেখেছেন।’কনফেকশনারী দোকানদার ওমর ফারুক বলেন, ‘মহাসড়ক থেকে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ৮টি গ্রামের মানুষ ও বাজারের ক্রেতারা চলাচল করে। ৫/৬ মাস আগে ঠিকাদার রাস্তা খোড়াখুড়ি করে ফেলে রাখে। বৃষ্টি হওয়ায় হাঁটু সমান জমা পানি ও পরে সৃষ্ট কাঁদায় চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।’মাংস ব্যবসায়ী দেলোয়ার বলেন, ‘অন্য জায়গায় গরু জবাই করে ভ্যানে করে মাংস বাজারে আনতে হয়। রাস্তার কারণে এখন ভ্যান আসতে পারেনা। ক্রেতা আসতে পারেনা বিধায় বাজারের ব্যবসায়ীরা লোকসান দিচ্ছেন।’উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নরুজ্জামান বলেন, ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ করার জন্য। ঠিকাদার কাজ করছেন না। আমি কাজ বাতিলের সুপারিশ করছি কাজ বাতিল করবেন এক্সিম সাহেব। যেহেতু কাজ বাতিল হয়নি সেহেতু তাকে সময় দিতে হবে। গতকাল তিনি অফিসে এসেছেন এক সপ্তাহের ভিতর কাজ শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়েছি। বাবুর্চি বাজার সড়কটি উন্নয়ন কাজের জন্য কাজ শুরু করেছিল ঠিকাদার, এখন শুনেছি গত ৬/৭ মাস ঠিকাদার কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন রেখেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেয়ার পর তিনি জানিয়েছেন ওই কাজ চুক্তি বাতিলের জন্য জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। জেলা অফিস যদি ঠিকাদারের চুক্তিটি বাতিল করে তাহলে নতুন করে কাজটি অন্যকে দিয়ে করা যাবে অথবা ওই ঠিকাদারকে দিয়ে যদি দ্রুত কাজটি শেষ করারে পারে তাহলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে।সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অলিউর রহমান জানান বিভিন্ন সমস্যার কারণে রাস্তার কাজটি বন্ধ ছিল। পুনরায় কাজটি আবার শুরু করছি আমি।